
পরম ভোলানাথ তাঁর নশ্বর দেহে আবির্ভূত হন ১৯০৮ সালের ২৫শে ডিসেম্বর, পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার মেজিয়া গ্রামে। তাঁর পিতা ছিলেন ধর্মপরায়ণ অমরনাথ মুখোপাধ্যায় এবং মাতা পবিত্র সরশিবালা দেবী। তিনি হাওড়া জেলার একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার জীবনযাপন করতেন। সেই কারণে তিনি “মাস্টারমশাই” নামে পরিচিত ছিলেন।
উপরের বিবৃতিটি কেবল সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে তাঁকে ব্যাখ্যা করেছে—এটি তাঁর অন্তরাত্মাকে প্রকাশ করে না, এবং তিনি কেন এই পৃথিবীতে আগমন করেছিলেন, সেই উদ্দেশ্যও পরিষ্কার করে না। তিনি আদতে মানবরূপে ঐশ্বরিকতার এক প্রকাশ ছিলেন। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল মানবজাতির মধ্যে নিহিত আধ্যাত্মিক গুণাবলিকে বিকশিত করা।
তাঁর অন্তরাত্মা সম্পূর্ণ গৌরবের সাথে প্রতিষ্ঠিত হয় যখন মহাজাগতিক শব্দ “ওঁ” স্বর্গ থেকে অবতরণ করে এবং তাঁকে স্পর্শ করে। অতঃপর পবিত্র মা “দুর্গা” – সৃষ্টির জননী, তাঁর সামনে Erscheinat হন এবং তাঁকে ব্রহ্ম-জ্ঞান – সর্বোচ্চ চেতনায় অবগাহন করার দায়িত্ব দেন। এই ঘটনা ঘটে ১৯৪৩ সালের বৈশাখী শুক্লা চতুর্দশী তিথিতে। তিনি তৎক্ষণাৎ ভগবানের সঙ্গে ঐক্যমিলন সাধন করেন। তাঁর মধ্যে পূর্বেই বিদ্যমান জ্ঞান পূর্ণপরিমাণে বিকশিত হয় এবং তাঁর আত্মার সুগন্ধ সমস্ত দিকে ছড়িয়ে পড়ে।
পরম ভোলানাথের অন্যদের মতো কোন গুরু ছিলেন না। তাঁর প্রকাশ স্বতঃস্ফূর্ত ছিল। তিনি তাঁর অন্তরাত্মার প্রকাশের চেয়ে দমনকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। তাঁর বহিরাগত জীবন কোনো উল্লেখযোগ্য ঘটনার ভরপুর ছিল না। কিন্তু তাঁর অন্তর্গত জীবন অবিরত আধ্যাত্মিক প্রকাশ ও মহাজাগতিক শব্দ “ওঁ” দ্বারা প্রবাহিত ছিল। তিনি তাঁর ভক্তদের সামনে কেবলমাত্র তাঁর অভিজ্ঞতার একটি অল্প অংশ তুলে ধরেছিলেন। সাধারণ মানুষের জন্য তিনি সৃষ্টি-মাতা ও পিতা – কালী ও শিবের নাম জপ করার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর অবসান ঘটে ১৪০০ বঙ্গাব্দের আশ্বিন শুক্লা চতুর্দশী (২৮ অক্টোবর ১৯৯৩)।